শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুটে যাত্রীবাহি একটি ট্রলারে আবারও মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে আব্দুর রশিদের মালিকাধীন যাত্রীবাহি ট্রলারটি সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে ফেরার পথে নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পৌঁছলে এই গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন, সেন্টমার্টির সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
তিনি জানান, সকালে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফেরার পথে যাত্রীবাহি একটি সার্ভিসের ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে ট্রলারে থাকা লোকজন ভেতরে নিচে শোয়ে থাকে। এতে হতাহত না হলেও ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে গুলি লেগেছে। পরে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ভীড়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। তবে মিয়ানমার থেকে সেদেশের বর্ডার গার্ড পুলিশ বিজিপি নাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে সেটা এখনো পরিস্কার না। যদিও রাখাইন রাজ্যে অধিকাংশ আরাকান আর্মির দখলে বলে শোনা যাচ্ছে।
এ ঘটনার পর আবারও টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌরুটে আতংক বিরাজ করছে বলে জানান তিনি।
ট্রলারের থাকা যাত্রী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘সেন্টমার্টিন থেকে অসুস্থত মা’কে নিয়ে কক্সবাজারে চিকিৎসার জন্য সার্ভিস ট্রলারে করে টেকনাফে রওনা করি। মাঝপথে শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চরের কাছাকাছি পৌঁছলে হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ করে। এতে ট্রলারে থাকা ৫০-৬০ যাত্রী চিৎকার শুরু করে। অনেকে কান্নাকাটি করে ট্রলারের নিচে শোয়ে পরে। অন্তত ৫০ রাউন্ড মতো গুলি ছুঁড়ে। এতে ট্রলারে একটি কাঠ ভেঙ্গে পরে। মাঝখানে অনেক দিন বন্ধের পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ফের গুলির ঘটনা ঘটে।’
সীমান্তে ট্রলারে গুলি বর্ষণের বিষয়টি খোঁজ খবর নেওয়া বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফের ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে ট্রলারে গুলি করার বিষয়টি এখন শুনেছি। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
এর আগে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে ১ জুন বিকেলে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হওয়া পণ্যসহ ১০ যাত্রীর এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে প্রথম বারের মতো গুলি বর্ষণ করা হয়। এরপর ৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোট গ্রহণ হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রলারকে লক্ষ্য করে একই পয়েন্টে ফের গুলি করা হয়। ৮ জুন আরও এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। ১১ জুন একটি স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ বদরমোকাম এলাকার অতিক্রমের সময় ট্রলার ২ টিকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়েছিল। প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply